সত্য-মিথ্যার স্বরুপ সন্ধান
সত্য-মিথ্যার স্বরুপ সন্ধান মানব আত্মার এক অন্তহীন আকুতি
মানব সভ্যতার জন্মলগ্ন থেকে প্রতিটি সমাজ, প্রতিষ্ঠান, পরিবার ও ব্যক্তি কোন না কোন ভাবে সত্য-মিথ্যার সংগ্রামে ব্যাপৃত হয়েছে, বিভ্রান্ত হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে অথবা সুবিধাপ্রাপ্ত হয়েছে। অন্যের মিথ্যার আগ্রাসনে কোন প্রতিষ্ঠান, পরিবার বা ব্যক্তি চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হলেও নিজের সুবিধার জন্য সেও একইভাবে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে থাকে। মানব জীবনে আসলে এ এক দারুণ সংকট। তাই সত্যের স্বরুপ সন্ধান, মিথ্যার আবরণ অপসারণ আমাদের অন্তরের অন্তস্থলের চাওয়া হলেও তাকে পাওয়া কঠিন।
সত্যের স্বরুপ এবং মিথ্যার কুহেলিকার সন্ধান আসলে একটি দীর্ঘ-মেয়াদী আদর্শিক সংগ্রাম। ব্যাপক সংখ্যক জনগণকে সম্পৃক্ত করা ছাড়া এই সংগ্রামে বিজয় অর্জন করা বলতে গেলে প্রায় অসম্ভব। তাই আমরা মনে করি সত্য কী, মিথ্যারর আড়ালে সত্য কীভাবে চাপা পড়ছে তা উদঘাটনে ওয়েবসাইট, ইলেকট্রনিক মিডিয়া এবং প্রিন্ট মিডিয়ার মাধ্যমে জনগণের উচিত সরাসরি এই ধরনের আলোচনায় অংশগ্রহণ করা। সত্য-মিথ্যার স্বরুপ সন্ধান একটি দার্শনিক বিষয় হলেও এর প্রভাব মানব জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে প্রসারিত। ব্যক্তি ও পরিবার থেকে শুরু করে সমাজের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে তা হোক রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক বা ধর্মীয় এর সর্বব্যাপ্তিতা অত্যন্ত গভীরে প্রোথিত। তাই মানব-আত্মার এক অন্তহীন জিজ্ঞাসার স্বরুপ সন্ধানে সহমর্মিতা বাংলাদেশ একটি উদ্যোগ নিয়েছে। এই উদ্যোগের দুটি অংশ আছেঃ –
দীর্ঘ-মেয়াদী কার্যক্রম (দার্শনিক, ধর্মীয়, রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক বিষয় সম্পর্কিত)
স্বল্প-মেয়াদী কার্যক্রম (বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনীতি সম্পর্কিত)
১. দীর্ঘ-মেয়াদী কার্যক্রম:
এই ক্ষেত্রে আমরা প্রধান দুটি বিষয়ে সংলাপের সূত্রপাত করতে পারি সেগুলো হচ্ছে:
১.১ দার্শনিক, ধর্মীয় ও সামাজিক এবং
১.২ রাজনৈতিক অর্থনীতি
১.৩ দার্শনিক, ধর্মীয় ও সামাজিক
১.১.১ বর্ণ বৈষম্যের উৎপত্তি কোথায়? বিভিন্ন অবয়বে পরিবারের ভেতরেই কি ব্যাপক বৈষম্য এবং পক্ষপাতিত্ব নেই? সমাজের মৌলিকতম প্রতিষ্ঠান পরিবার যদি এই সমস্যা থেকে থাকে তবে তা কি যথেষ্ট গুরুত্বের সাথে চিহ্নিত হয়েছে? এই সমস্যার সমাধানে কী কর্মপন্থা নেয়া যেতে পারে?
১.১.২ সামাজিক কারণই আসরে দারিদ্রের মূল কারণ। তাই দারিদ্রের কারণগুলো হলো:
সমাজ, কমিউনিটি ও পরিবারে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং পরমতসহিষ্ণুতা বোধের অভাব;
সমাজে ধর্ম-বর্ণ, শ্রেণী-গোত্র, জাতীগত বিশ্বাসের নেতিবাচক প্রভাব;
সমাজ এবং পরিবারে যক্তি, সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি এবং সহমর্মিতা বোধের অভাব অর্থাৎ সামাজিক পুঁজির অনুপস্থিতি।
১.১.৩ পারিবারিক জীবনে ব্যক্তির অপরাধ ও দুর্নীতির প্রবণতা;
১.১.৪ যে বক্তি পরিবারে, অপরাধ ও দুর্নীতি করছে তার পক্ষে রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে কি দুর্নীতিমুক্ত হওয়া সম্ভব?
১.১.৫ যে ব্যক্তি মাদাকাসক্ত এবং জুয়া খেলায় আসক্ত তার পক্ষে কি দুর্নীতিমুক্ত হওয়া সম্ভব?
১.১.৬ ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজ জীবনে ধর্মের প্রভাব ও ভ‚মিকা;
১.১.৭ রাষ্ট্রীয় জীবনে ধর্মের প্রভাব ও ভ‚মিকা;
১.১.৮ একজন দুর্নীতিবাজ, খৃস্টান, একজন দুর্নীতিবাজ হিন্দু এবং একজন দুর্নীতিবাজ মুসলিমের মধ্যে কি কোন পার্থক্য আছে?
১.১.৯ ধর্মে বলা হয়েছে কর্ম মানুষের জীবনের অন্যতম এবাদত। তাহলে কর্মের বিষয়ে যথেষ্ট গুরুত্ব না দিয়ে আমরা কেন ধর্মের ছোট-খাট আচার অনুষ্ঠানের উপর এত গুরুত্ব দিচ্ছি?
১.২. রাজনৈতিক অর্থনীতি
১.২.১ দারিদ্রের মাপকাঠি কী? অর্থনৈতিক দারিদ্রই কি দারিদ্র মাপার একমাত্র নিয়ামক? দারিদ্রের মূল কারণ কী?
শ্রেণী বৈষশ্য ও বর্ণ বৈষম্য;
রাজনীতিবিদদের দুর্নীতিপরায়ণতা, নেতৃত্ব দানের অক্ষমতা এবং কপটতা;
আমলাতন্ত্র
বিশ্বব্যাঙ্ক, আইএমএফ এবং বিভিন্ন বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের বিশ্বব্যাপী আগ্রাসন।
১.২.২ গণতন্ত্রের স্বরূপ কী? পাঁচ বছর পর সংসদ নির্বাচন, রাষ্ট্রের রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক ক্ষমতার বিকেন্দ্রীয়করণই কি গণতন্ত্র নাকি গণতন্ত্র একটি মূল্যবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গি।