মুক্তিযুদ্ধের গৌরব
বিজয়ী বাঙ্গালি জাতির সুশাসন প্রতিষ্ঠার পথে নবযাত্রা : এই যাত্রাই হলো মুক্তিযোদ্ধের গৌরব।
বাঙালির মহান মুক্তিযুদ্ধ মূলত রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠার এক সর্বব্যাপী যুদ্ধ ও সংগ্রাম
বাংলাদেশের মানুষ এক ব্যতিক্রমী ও গর্বিত জাতি যাঁরা দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সুশাসন প্রতিষ্ঠার যুদ্ধে জয়ী হয়েছিল । এ সময়ে ৩০ লক্ষ স্বাধীনতাকামী নারী-পুরুষকে প্রাণ বিসর্জন দিতে হয়েছে এবং ৩ লক্ষ দেশপ্রেমিক মা-বোন দেশমাতৃকার স্বার্থে তাদের সম্ভ্রম ও সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের ৫০ বছরে বর্তমানে বাংলাদেশ যে অগ্রগতি অর্জন করেছে তা বিশ্বে এক নতুন রোল মডেল তৈরি করেছে।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের একটি সরকার পরপর তিনবার ক্ষমতায় থাকতে পেরেছে বলেই কেবলমাত্র এই অসাধারণ সফলতা অর্জন করা সম্ভব হয়েছে । এক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আদর্শিক ভিত্তি মুক্তিযুদ্ধের প্রধান ৪ স্তম্ভ- জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র এবং ধর্ম-নিরপেক্ষতা এই ব্যতিক্রমী অগ্রগতির জন্য প্রয়োজনীয় সকল শক্তির উৎস হিসেবে কাজ করেছে।
উল্লিখিত এই ৪ স্তম্ভের মধ্যে ধর্ম-নিরপেক্ষতা বা অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ব্যবস্থার চিন্তা একটি বিশেষ ইতিবাচক সমাজ বান্ধব বৈশিষ্ট্য হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। এই দৃষ্টিভঙ্গি কেবলমাত্র ধর্মসমূহের মধ্যে বিরোধের বিরুদ্ধে বলে না, এই আদর্শ শ্রেণী-বৈষম্যের বিরুদ্ধে, যে কোন বর্ণপ্রথা, লিঙ্গ বিভাজন অর্থাৎ যাবতীয় বিভক্তির বিরুদ্ধে বলে। সে কারণে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শই কেবল পারে একটি বিভক্ত সমাজ ও জনগোষ্ঠীকে ঐক্যবদ্ধ করার মাধ্যমে সমাজে সার্বিক সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে।